এসএসসি(ভোকেশনাল) -
পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং-২ -
দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) |
| NCTB BOOK
5
বিভিন্ন জাতের রাজহাঁসের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of different species of Goose )
টাউলোজ রাজহাঁস (Toulouse Goose)
এদের উৎপত্তি ফ্রান্সে।
এরা মাংসল ও বড় আকারের রাজহাঁস ।
দেহ লম্বা, প্রশস্থ ও গভীর বা মাটির সমান্তরাল করে রাখে।
টাউলোজ রাজনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এদের বুক উঁচু, পুরু ও গভীর।
ডানা লম্বা, লেজ খাটো, মাথা বড়, ঠোঁট মজবুত, গলা লম্বা ও পুরু এবং পা মজবুত।
পালকের রঙে গাঢ় ও হালকা ধূসরের মিশ্রণ দেখা যায় ।
ঠোঁট, পা ও পায়ের পাতা কমলা এবং চোখ খোলা বাদামি রঙের।
প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ১২.৭-১৩.০ কেজি ৩৯১ - ১০০ কেজি হয়ে থাকে।
অ্যাম্বডেন রাজহাঁস (Embdan Goose)
এ জাতের রাজহাঁসের উৎপত্তি জার্মানিতে।
এদের দেহ প্রশস্থ, পুরু ও গোলাকার।
পিঠ লম্বা, সোজা ও মজবুত।
ডানা দুটো আকারে লম্বা।
মাথা লম্বা ও সোজা, ঠোঁট মজবুত ।
চোখ খুবই উচ্ছ্বল হয়ে থাকে। পা খুব খাটো, পালক শক্ত ও সুবিন্যস্থ।
হাঁসা ও হাঁসী উভয়েই সাদা রঙের।
ঠোঁট কমলা এবং চোখ হালকা নীল।
পা ও পায়ের পাতা কমলা রঙের।
প্রাপ্ত বয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যা ১৩.৬ - ১৫.৪ কেজি ও ১১ - ১০.০ কেজি হয়ে থাকে।
আফ্রিকান রাজহাঁস (African Goose)
এরা আকারে বেশ বড় ও লম্বা।
মাথা প্রশস্থ ও গভীর।
মাধায় বড় ধরনের গুটি থাকে।
মাথা খাঁড়া করে চলাফেরা করে।
পিঠ প্রশস্থ, চ্যাপ্টা ও লম্বা, বুক গোলাকার ।
ডানা বড় ও মজবুত এবং লেজ বড়।
এদের গলকমল রয়েছে যা পুরু ও বড়।
পা মাঝারি পদ্মা।
হাঁসা ও হাঁসী উভয়ের মাথার রঙ হালকা বাদামি, ডোরাকাটা দাগ থাকে।
প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৯.১০ ও ৮১৫ কেজি হয়ে থাকে।
আমেরিকান ধূসর রাজহাঁস (American Gray Goose)
এরা আকারে মাঝারি। বুক প্রশস্থ ও গভীর।
ঘাড় থেকে লেজ পর্যন্ত পালক ধনুক আকৃতির ।
লেজে চ্যাপ্টা খাড়া পালক থাকে।
মাথা আকারে মাঝারি ও ডিম্বাকৃতির।
খাঁড়া ও মাঝারি লম্বা গলাটি চলাফেরার সময় উঁচু করে রাখে ।
মাথার পালক ফ্যাকাসে ধূসর এবং তা বুক পর্যন্ত বিস্তৃত। শরীরের পালক হালকা ধূসর রঙের এবং তা ক্রমশ ফ্যাকাসে হয়ে পেট, পিঠ ও লেজে সাদা পালকে রূপান্তরিত হয়েছে।
লেজের পালকে বাদামি ও সাদার মিশ্রণ হলেও প্রান্তগুলো ফ্যাকাশে ধূসর।
ঠোঁট, পা এবং পায়ের পাতা কমলা রঙের, চোখ ঘোলাটে কালো।
প্রাপ্ত বয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৮.১৫ ও ৭.২৫ কেজি হয়ে থাকে।
ধূসর ব্রেকন রাজহাঁস (Gray Bracken Goose )
উৎপত্তিঃ এ জাতের রাজহাঁসের উৎপত্তিস্থল বৃটেনে।
সাধারণ বৈশিষ্ট্য:
এরা আকারে মাঝারি এবং অত্যন্ত মাংসল ।
এ জাত খুবই প্রাণচঞ্চল এবং উর্বর ডিম উৎপাদক হিসেবে পরিচিত।
এদের শরীর প্রশস্থ, বুক গোলাকার, ডানা বড় ও মজবুত, গলা চিকন ও লম্বা ৷
এ জাতের রাজহাঁসের পা খাটো ও পালক আঁটোসাটো হয়।
হাসা ও হাঁসি উভয়ের পালক ঘন ধূসর রঙের ।
পা ও ঠোঁট লালচে এবং চোখ গাঢ় বাদামি।
হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৮.৯০ ও ৭.২৫ কেজি হয়ে থাকে ।
ধূসর পিঠওয়ালা রাজহাঁস (Gray-backed Goose)
উৎপত্তিস্থল: এ জাতের উৎপত্তি ইউরোপে।
শরীর মাটির সমান্তরাল।
আকারে মাঝারি । পিঠ বাঁকানো, লম্বা ডানা লেজের পালককে অতিক্রম করে।
মাথা প্রশস্ত ও সুন্দর ।
বড় বড় চোখ, মাথার পালক ধূসর।
গলার উপরের পালক ধূসর, নিচের পালক সাদা ।
পিঠের ধূসর পালকের প্রান্ত সাদা। বুক, শরীর, পাখা, লেজ সাদা। তবে ডানার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পালকের মাথাগুলো ধূসর রঙের।
ঠোঁট কমলা, চোখ নীল, পা ও পায়ের পাতা কমলা রঙের ।
প্রাপ্তবয়ষ্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৭.৭ ও ৬.৮ কেজি হয়ে থাকে ।
চীনা রাজহাঁস (Chinese Goose)
চীনা রাজহাঁস আকারে ছোট ।
এরা খুবই উর্বর জাতের রাজহাঁস।
এদের দেহ সুঠাম ও খাড়া। এরা অত্যন্ত তৎপর ।
এদের পিঠ বেশ খাটো ও প্রশস্ত। বুক গোলাকার, ডানা লম্বা ও মজবুত এবং তা শরীরের সাথে মজবুতভাবে এটে থাকে ।
এদের মাঝারি আকারের মাথায় বড় আকারের গুটি থাকে।
গলা খুব লম্বা, অনেকটা সোয়ানের মতো ।
পা খাটো ও মজবুত; দুপায়ের মাঝখানের দূরত্ব বেশি।
চীনা রাজহাঁস দুই ধরনের হয়ে থাকে, যেমন-সম্পূর্ণ সাদা ও বাদামি ধূসর রঙের।
প্রাপ্ত বয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৪.৫ - ৫.৪৫ কেজি ও ৩.৬০ - ৪.৫৫ কেজি হয়ে থাকে ।
ছাই রঙের পিঠওয়ালা রাজ (Ash-backed Goose)
এদের উৎপত্তি আমেরিকায়।
এরা আকারে মাঝারি ।
এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ৰুক পুরু ও মাংসল, পিঠ বাঁকা, মাথা বড় ও বাঁকানো।
মাথার রঙ সাদা।
গলার উপরের রঙ ছাই এবং নিচের রঙ সাদা।
পিঠের রঙ সাদা।
ঠোঁট লালচে, চোখ নীল এবং পা ও পায়ের পাতা লালচে।
প্রাপ্তবয়স্ক হাঁস ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৭.৭ ও ৬.৮ কেজি।
পিল গ্রীমস (Pill Grimes )
এ জাতের উৎপত্তি বৃটেনে।
এদের বুক গভীর, পুরু ও মাংসল।
ডানা লম্বা ও মজবুত। দেহ সামান্য খাড়া।
মাঝারি আকারের মাথাটি ডিম্বাকৃতির।
পালক শক্ত, উজ্জ্বল আঁটোসাটো।
হাঁসা সাদা রঙের, তবে এর ডানা ও পিঠে ধূসর রঙের দাগ আছে।
হাঁসির মাথায় সাদা ও ধূসর রঙের মিশ্রণ।
গলা ও বুকের ধূসর রংয়ের পালক ক্রমশ পেছন দিকে ফ্যাকাশে হতে হতে সাদা রঙে পরিণত হয়েছে।
ঠোঁট কমলা
চোখ ঘোলা বাদামি রঙের।
পা ও পায়ের পাতা কমলা রঙের।
প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৩.৩৫ ও ৫৯০ কেজি হয়ে থাকে।
রোমান রাজহাঁস ( Roman Goose)
এদের উৎপত্তি ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায়।
এরা আকারে ছোট, উজ্জ্বল সাদা রঙের।
রাজহাঁসের দেহ সুঠাম গতীর ও গোলাকার।
এরা শান্ত স্বভাবের।
দেহে হাড়ের তুলনায় আনুপাতিক হারে মাংসের পরিমাণ বেশি। পলা খাড়া। পা খাটো।
ঠোঁট, পা ও পায়ের পাতা কমলা এবং চোখ হালকা নীল রঙের।
প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৫.৪৫ - ৬.৩৫ কেজি ও ৪.৫৫ - ৫.৪৫ কেজি হয়ে থাকে।
রোমান রাজহাঁস আকারে ছোট।
উজ্জ্বল সাদা রঙের এ রাজহাঁসের দেহ সুঠাম, গভীর ও গোলাকার।
সিবাস্টোপল রাজহাঁস (Sebastopol Goose)
এ জাতের উৎপত্তি পূর্ব ইউরোপে ।
এ জাতের রাজহাঁসের দেহ খাড়া, পেচানো ও অবিন্যস্ত সাদা পালকে আবৃত।
এরা আকারে মাঝারি।
ওজনের তুলনায় এদেরকে দেখতে অনেক বড় মনে হয়।
বেশ মাংসল হয়ে থাকে।
বুক বেশ পুরু ও গভীর।
পা খাটো ও মজবুত।
পা ও পায়ের পাতা কমলা রংয়ের চোখ উজ্জ্বল নীল রঙের।
প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসা ও হাঁসির ওজন যথাক্রমে ৬.৩৫ ও ৫.৪৪ কেজি হয়ে থাকে।
দেশী রাজহাঁস :
বাংলাদেশে রাজহাস পালন তেমন জনপ্রিয় নয়। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এদেশে রাজহাঁস পোষা হয় না। তবে অনেকে সখ করে পুষে থাকেন । দেশী রাজহাঁসগুলোর মধ্যে দু'ধরনের রঙ দেখা যায়। একটির দেহের রঙ কিছুটা আফ্রিকান রাজহাঁসের রঙের ন্যায়। অন্যটি পুরোপুরি সাদা।